সাদমানের পর শান্তর ফিফটি, চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের লিড ছাড়াল ‘১৮০’

গল টেস্টের চতুর্থ দিনটা ভালোই কাটলো বাংলাদেশের। বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও দাপট দেখালো লাল সবুজরা। যদিও ভালো খেলতে থাকা সাদমান ইসলামের আউট কিছুটা হতাশ করেছে। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের অনবদ্য জুটিতে দিনশেষে বড় লিড তুলে নেওয়ার পথে রয়েছে লাল সবুজরা।

শুক্রবার (২০ জুন) গল টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৭৭ রান। সাদমান ৭৬ রানে আউট হলেও ৫৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন অধিনায়ক শান্ত। তার সঙ্গী মুশফিক অপরাজিত রয়েছেন ২২ রানে। প্রথম ইনিংস শেষে ১০ রানের লিড ছিল টাইগারদের। সব মিলিয়ে লিড বেড়ে দাঁড়াল ১৮৭ রানে।

গল টেস্টের ভাগ্য নির্ধারণ হবে পঞ্চম দিনে। তবে চতুর্থ দিন পর্যন্ত চালকে আসনে রয়েছে শান্ত বাহিনী। শেষ দিনের প্রথম সেশনটা ব্যাটাররা ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারলে আর পরের দুই সেশনে বোলাররা আধিপত্য করলে, জয়টাও অসম্ভব নয় টাইগারদের জন্য।

এর আগে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৩৬৮ রানে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। ৩৭ রানে কামিন্দু মেন্ডিস আর ১৭ রানে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা অপরাজিত থেকে ব্যাট করতে নামেন। দুজনের ৪৬ রানের জুটি ভেঙে দেন স্পিনার নাঈম হাসান। এরপর ক্রিজে নামা কুশল মেন্ডিসকে (৫) স্থায়ী হতে দেননি হাসান মাহমুদ। সপ্তম উইকেট জুটিতে মিলান রত্নানায়েককে নিয়ে ৮৪ রানের জুটি গড়েন কামিন্দু। তাদের জুটিও ভাঙেন হাসান। টাইগারের পেসারের বলে বোল্ড হয়ে ৩৯ রানে সাজঘরে ফেরেন মিলান। তখনো লিড ‍তুলে নেওয়ার পথেই ছিল শ্রীলঙ্কা। তবে ঘূর্ণির জাদু দেখিয়ে ক্রিজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন নাঈম।

কামিন্দুকে সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপে পোড়ান। ১৪৮ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৮৭ রান করে কট বিহাইন্ড হন এ ব্যাটার। এরপর থারিন্দু রত্নানায়েকে (০) ও অসিথা ফার্নান্দোকে (৪) বোল্ড করে শ্রীলঙ্কাকে দ্রুত অলআউট করে ফাইফার তুলে নেন নাঈম। ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন প্রবাত জয়াসুরিয়া। নাঈমের ৫ ছাড়াও ৩টি উইকেট নিয়েছেন হাসান। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম ও মুমিনুল হক।
আগের দিন পাথুম নিসাঙ্কা ১৮৭ আর দিনেশ চান্দিমাল ৫৪ রান করে আউট হয়েছিলেন। অলআউট হওয়ার আগে ৪৮৫ রান তুলে নেয় স্বাগতিকরা।

তাতে প্রথম ইনিংসে ৪৯৫ রান করা বাংলাদেশ ১০ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে। এ ইনিংসেও হতাশ করেন বিজয়। প্রথম ইনিংসে ১০ বলে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন এ ওপেনার। আজ দ্বিতীয় ইনিংসেও ওপেন করতে নেমে আরও ১০ বল বেশি খেলে ৪ রান করে আউট হলেন। প্রবাত জয়াসুরিয়ার করা অষ্টম ওভারে পঞ্চম বলটি একটু উঠেছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। বিজয় অযথাই খোঁচা মেরে আউট হলেন। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে শুরু থেকেই আধিপত্য করছিলেন সাদমান। তাকে দ্বিতীয় উইকেটে সঙ্গ দিচ্ছিলেন মুমিনুল। কিন্তু স্পিনার থারিন্দু রত্নায়েকের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ভালো খেলতে খেলতে ১৪ রান করে ফিরে গেছেন এই বাঁহাতি। তার আউটে সাদমানের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি ভাঙে।

এরপর বাংলাদেশকে বড় লিডের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন সাদমান ও শান্ত। এর মধ্যে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি তুলে নেন সাদমান। এগোচ্ছিলেন তৃতীয় সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু মিলান রত্নায়েকের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের সুইংয়ে পরাস্ত হয়ে এলবিডব্লিউ হন সাদমান। দারুণ খেলতে থাকা সাদমান ফেরেন ১২৬ বলে ৭৬ রান করে। তাতে শান্তর সঙ্গে ভাঙে তার ৬৮ রানের জুটি।

তবে দিনের বাকি সময়ে আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি প্রথম ইনিংসের দুই নায়ক শান্ত ও মুশফিক। প্রথম ইনিংসে ১৪৮ করা শান্ত ৫৬ আর ১৬৩ করা মুশফিক ২২ রানে অপরাজিত রয়েছেন। দুজনের জুটিতে এসেছে ৪৯ রান। পঞ্চম দিনেও তাদের উপর থাকছে গুরু দায়িত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *