হঠাৎ খেলা বন্ধ

শেষ পাঁচ বছরে গলে প্রথম ইনিংসে চারশ বেশি রান হয়েছে নয়বার। আটবারই ম্যাচ জিতেছে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করা দল। একবার হারের ঘটনা ঘটেছে। আয়ারল্যান্ড ২০২৩ সালে ৪৯২ রান করেও ম্যাচ হেরেছিল।

বৃষ্টিতে খেলা আপাতত বন্ধ রয়েছে। ৪ উইকেটে বাংলাদেশের রান ৪২৩। মুশফিকুর ১৫৯ ও লিটন ৬১ রানে অপরাজিত রয়েছেন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তাদের সংগ্রহ ১১৪ রান।

আগের দিনের অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম ভালো শুরু পেয়েছিলেন। শান্ত বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। পাহাড়সমান জুটি ভাঙতে পেরেছে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু নতুন ব্যাটসম্যান লিটনকে নিয়ে আবার লড়াই শুরু করেন মুশফিকুর। তাতে তরতরিয়ে বাড়ছে বাংলাদেশের রান। বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যাচ্ছে অতিথিরা।

৪ উইকেটে বাংলাদেশের রান ৩৮৩। সকালের সেশনে ২৭ ওভারে ৯১ রান জমা করেছে বাংলাদেশ। মুশফিকুর ১৪১ ও লিটন ৪৩ রানে ব্যাটিং করছেন। পঞ্চম উইকেটে তাদের জুটিতে এসেছে ৭৪ রান।

লিটন ও মুশফিকুর একাধিক সুযোগ দিয়েছিলেন। দুইবার রান আউট হওয়া থেকে বেঁচে যান তারা। লিটনের একটি ক্যাচ ছেড়েছেন নিশাঙ্কা। সুযোগগুলো নিতে পারলে স্কোরবোর্ডের চিত্র অন্যরকম হতেও পারত।

থারিন্দুর বলে ১৪ রানে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছিলেন লিটন। বেঁচে যাওয়ার পর এই অফস্পিনারকে একই জায়গা দিয়ে দুটি ও পরে পয়েন্ট দিয়ে একটি চার হাঁকান। আক্রমণাত্মক ও নিজের সহজাত মনোভাবে ব্যাটিং করছেন লিটন। মুশফিক খেলছেন দেখেশুনে। তাদের দুজনের ব্যাটে বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনে কতদূর যায় সেটাই দেখার।

লিটন-মুশফিকুরের জুটির ফিফটি

অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হওয়ার পর শ্রীলঙ্কাকে একাধিক সুযোগ দিয়েছিলেন লিটন ও মুশফিকুর। কিন্তু স্বাগতিকরা সেসব নিতে পারেননি। তাতে থিতু হয়েছেন দুজনই। ব্যাটিং ধারাবাহিকতায় জুটির পঞ্চাশ রান এরই মধ্যে তুলে দিয়েছেন তারা। ৪ উইকেটে বাংলাদেশের রান ৩৭৩। জুটির রান ৬৪। মুশফিকুর ১৩৫ ও লিটন ৩৯ রানে ব্যাটিং করছেন।

পানি পান বিরতি

গলে দ্বিতীয় দিনের প্রথম ঘণ্টায় দুই দলের লড়াইয়ে ভারসাম্য ছিল। শ্রীলঙ্কা ভাঙতে পেরেছে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের প্রতিরোধ। শান্ত দেড়শ ছোঁয়ার আগে আউট হন। মুশফিকুর নতুন ব্যাটসম্যান লিটনকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজ করছেন।

দিনের প্রথম ঘণ্টায় ১৩ ওভার খেলা হয়েছে। রান হয়েছে ৩৫। শ্রীলঙ্কা আরো একটি উইকেট পেতে পারত। পানি পানের বিরতির আগে রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল লিটন ও মুশফিকুরের। শ্রীলঙ্কার ফিল্ডাররা পারেননি সুযোগ কাজে লাগাতে।

পরিসংখ্যান

চতুর্থ উইকেটে দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি রানের জুটি গড়লেন মুশফিকুর ও শান্ত। দুজন ২৬৪ রান করেছেন। আর ২ রান করতে পারলে দেশের মাটিতে মুশফিকুর ও মুমিনুলের সর্বাধিক ২৬৬ রানের রেকর্ডটাও নিজের করে নিতে পারতেন তারা।

দেড়শ ছোঁয়া হলো না শান্তর

দ্বিতীয় দিনের সকালে শ্রীলঙ্কা ভাঙল বাংলাদেশের প্রতিরোধ। আগের ওভারে পেসার আসিথার বলে আম্পায়ার তাকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন। নাজমুল হোসেন শান্ত রিভিউ নিয়ে টিকে যান। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারলেন না। পরের ওভারের প্রথম বলে আসিথা তুলে নেন তার উইকেট।

ডানহাতি পেসারের স্লোয়ার লেন্থ বল আগেভাগে ড্রাইভ করেছিলেন শান্ত। টাইমিং মেলাতে পারেননি। বল চলে যায় মিড অফে। সেখানে নিজের শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ দারুণ ক্যাচ নিয়ে শান্তকে আউট করেন।

বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের দেড়শ ছোঁয়া হলো না। ২৭৯ বলে ১৪৮ রান করেছেন ১৫ চার ও ১ ছক্কায়। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে তার জুটি ছিল ২৬৪ রানের। মুশফিকুরের নতুন সঙ্গী লিটন দাস।

পরিসংখ্যান

২০১৩ সালে বাংলাদেশ গলে ৬৩৮ রান করেছিল যা এখনও টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। মুশফিকুর রহিম সেই ম্যাচে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন।

কতদূর যাবে বাংলাদেশ?

শুরুর ৩ ব্যাটসম্যান দলীয় ৪৫ রানে সাজঘরে। সেখান থেকে কতদূরই বা যেতে পারে বাংলাদেশ? আগের পাঁচ দলীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৪৪ রান করেছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। বাকি চারটিতে ১৯১, ২৫৫, ১৬৪ ও ২৬৮ রানে অলআউটের রেকর্ড বাংলাদেশের। তার আগের পাঁচটিতে চারটিতেই দুইশও ছুঁতে পারেনি দলীয় রান।

গলে মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত যখন জুটি বাঁধলেন তখন বাজি ধরার লোক পাওয়ার কথা না। কিন্তু এই দুই ব্যাটসম্যান নিজেদের দৃঢ়চেতা মনোভাব, হার না মানা মানসিকতা, চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় ও দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে হাসালেন। উড়ালেন।

গলে গতকাল প্রথম দিন বাংলাদেশ শেষ করেছে ৩ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে। শান্ত ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ও মুশফিকুর দ্বাদশ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে এসেছে ২৪৭ রান। মুশফিকুর ১০৫ ও শান্ত ১৩৬ রানে অপরাজিত থেকে আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *