
জীবন কখন যে থমকে দাঁড়ায়, কেউ জানে না। সময়ের স্রোতে ভেসে চলা মানুষটা এক মুহূর্তেই হারিয়ে যায় চিরতরে। এমনই এক মর্মান্তিক পরিণতির নাম আজ দিয়েগো জোটা। পর্তুগিজ ফুটবলের উজ্জ্বল তারা, লিভারপুলের স্ট্রাইকার। আর অনেকে যে তাকে চিনত ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সতীর্থ হিসেবে।
মাত্র ২৮ বছর বয়সে জীবনের সমস্ত গৌরব, সাফল্য আর স্বপ্নের পথ থেমে গেল এক ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায়। স্পেনের জামোরা শহরে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় শুধু জোটা নন, প্রাণ হারিয়েছেন আরও এক তরুণ, জোটার ভাই। গাড়িটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি কারোর জীবন।
জোটা যেন জীবনের সেরা সময়টাই কাটাচ্ছিলেন। কয়েক দিন আগেই নেশন্স লিগ জিতেছেন পর্তুগালের হয়ে। ক্লাব লেভেলে লিভারপুলের হয়ে জিতেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। মাঠে ছন্দে ছিলেন, মাঠের বাইরেও। মাত্র দু’সপ্তাহ আগেই জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করেছিলেন, বিয়ে করেছিলেন প্রেমিকাকে।
পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল পোর্তোয়, এরপর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তি। সেখান থেকে উলভারহ্যাম্পটন হয়ে লিভারপুলে আসেন এই গতিময় ফরোয়ার্ড। জার্গেন ক্লপের অধীনে এফএ কাপ ও লিগ কাপ জিতেছেন। আর নতুন কোচ আর্নে স্লটের নেতৃত্বে সম্প্রতি লিভারপুলকে এনে দিয়েছেন প্রিমিয়ার লিগ শিরোপাও।
এত সাফল্যের মাঝখানে এভাবে বিদায় নেওয়া যেন এক নির্মম পরিহাস। কারও বিশ্বাস হচ্ছে না, যে মানুষটা কয়েকদিন আগেও গোল করে দর্শকদের উল্লাসে ভাসিয়েছিলেন, আজ তিনি নেই।
জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়টা শুরু করতে চেয়েছিলেন হাসিমুখে। কিন্তু ভাগ্য সে সুযোগ দিলো না। বিশ্বকাপের মাঠও আর দেখা হলো না তার। হয়ে রইলেন শুধুই স্মৃতির মানুষ। এক অকালপ্রয়াত নক্ষত্র, যার আলোটা আর দেখা যাবে না, শুধু অনুভব করা যাবে ভক্তদের হৃদয়ে।
জোটার মৃত্যুতে পর্তুগাল শোকে মুহ্যমান। ফুটবল বিশ্ব আজ স্তব্ধ।